৫ই ডিসেম্বর ২০১৫ সাপ্তাহিক বর্তমান প্ত্রিকা তে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে । যদিও বর্তমান পত্রিকা গোষ্ঠী এই প্রসঙ্গে বারবার তুলে ধরেছেন । তার জন্য তাদের ধন্য বাদ জানান উচিত বিশেষ রন্তিদেব সেন গুপ্ত কে যিনি বারবার এই প্রসঙ্গ এনেছেন । শ্যামাপ্রসাদ কে অস্বীকার করে যারা তার অবদান আড়াল করার চেষ্টা করেছেন ইতিহাস তাদের বিচার করছে ।
১৯৪৭ সালে বাংলা ও পাঞ্জাব ভাগের ভিতর ভারত ভাগ সম্পন্ন হল । বাংলার পূর্ব অংশ টি পাকিস্থানের ভাগে পড়ে আর পশ্চিম অংশ টি ভারতে । যদিও মহ ন্মদ আলি জিন্না অবশ্য সমগ্র বাংলা কে পাকিস্থানে চেয়ে ছিলেন । বাংলা হবে পাকিস্থানের । তাই কলিকাতা ও নোয়াখালী তে রক্ত গঙ্গা বইয়ে দিতে তিনি দ্বিধা করেন নি । জিন্নার আগ্রাসী থাবা থেকে পশ্চিম বাংলাকে ছিনিয়ে এনে ছিলেন । তাই তিনি বলতে পারেন jinna divide india i divide pakisthan । এই ভারত ভাগের পর জন্ম নেয় দুটি রাষ্ট্র ।
কোরান ভিত্তিক ইসলামিক রাষ্ট্র পাকিস্থান আর গণতান্ত্রিক ভারত । ব্যক্তি শ্যামাপ্রসাদ অবিভক্ত বাংলার হিন্দু জনগোষ্ঠী র স্বার্থের কথা চিন্তা করে পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যটির জন্ম দানে সক্ষম হয়ে ছিলেন । ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এই পর্ব টি সম্পর্কে নিরপেক্ষ ও যথাযথ মূল্যায়ন করা আজ জরুরী । কংগ্রেস কমিউনিস্ট এই ইতিহাস কে গোপন রেখেছে তাদের কর্মী সমর্থক দের মাঝে । সাম্প্রদায়িক হিসাবে চিহ্নিত ইতিহাস বিকৃত করেছে এরা ।
যদি তথ্য নিষ্ঠ ভাবে আলোচনা করা যায় তাহলে বলতে হয় পশ্চিম বঙ্গের জনক জন সঙ্গ নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখারজি । তার রাজনৈতিক সক্রিয় তা ছাড়া একাজ সম্ভব ছিল না । আজ আমরা পাকিস্থান অথবা বাংলাদেশে অধিবাসী হতাম । তার বাগ্মিতা ,আপোষহীন মনোভাব , দূরদর্শিতা জাতীয় রাজনীতি তে তাকে এক স্বতন্ত্র ও সু উচ্চ জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন ।
ভারতের স্বাধীনতার পর্বে মহ ন্মদ আলী জিন্নার থাবা থেকে পশ্চিম বঙ্গ ছিনিয়ে আনা আর কাশ্মীরে ভারত বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির বিরদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শেখ আব্দুল্লার কারাগারে তাকে হত্যা করা ভুল ঔ সধ প্রয়োগ করে । স্বাধীন ভারতের প্রথম শহীদ । ১৯৩০ সালে মুসলিম লীগের স ন্মেলনে উর্দু কবি ইকবাল মুসলমানের জন্য বসবাসের ভুমি দাবি করেন । ইকবালের দাবির ভিতরে আগামিদিনের পাকিস্থানের বিষবৃক্ষের বীজ লুকিয়ে ছিল ।
ইকবাল ইসলামী শাস্ত্র পড়াশুনা করে এসেছেন জার্মানি থেকে গান্ধী বা কংগ্রেস এর বুঝতে পারেনি সাঁরে জাহা সে আচ্ছে হিন্দুস্থান হামারা এর লেখক ইকবাল " আমরা মুসলমান ,সমগ্র বিশ্ব আমাদের ।" কিন্তু বাবা সাহেব আম্বেদকার বুঝেছিলেন তাই গান্ধিকে বলেছিলেন গোল টেবিল বৈঠকে যোগ দিতে যাতে বিচ্ছিন্নতা বাদী রা সামনে আসতে না পারে । ১৯৩৪ সালে নবাবজাদা লিয়া কত আলি আর উর্দু কবি ইকবাল লন্ডনে গিয়ে কোরান ভিত্তিক মুসলিম আবাস ভুমি তত্ত্ব নিয়ে জিন্নাকে বোঝান এ বোঝানো তে কাজ হল । জিন্না আবার ভারতে ফিরে এলেন । এক্ষেত্রে বলা প্রয়োজন ইসলাম ধর্ম অত সচেতন ছিল না ।
বাবা সাহেব আম্বেদক র লিখেছেন " জিন্নার আগ্রাসী ইসলামি রুপ আমরা পেলাম যে ইসলামের জন্য মৃত্যু বরন করতে রাজী । এই সময় তার জনসভা " আল্লা হু আকবর দিয়ে সভা শুরু হত আর কয়েদ ই আজম দিয়ে শেষ হত । লাহোর প্রস্তাবে মুসলিম লীগ ভারত ভাগের কথা বলল {১৯৪০} । তাদের বক্তব্য ছিল " হিন্দু মুসলমান আলাদা জাতি । এরা এক দেশে বাস করতে পারে না । এখানে গান্ধী দেশ ভাগের পক্ষে ছিলেন না ।
মুসলিম লীগের নেতৃত্বে কট্টর হিন্দু বিরোধী মানসিকতা ও মুসলিম লীগের রাজনীতি অনুধাবন করে বাবা সাহেব আম্বেদক র বুঝেছিলেন "অখণ্ড ভারত থাকবে , এটা কল্পনা কষ্ট সাধ্য । কারন বিগত কয়েক শো বছরের মধ্যেও ভারতবাসী একটি জাতি হিসাবে গড়ে উঠবে এমন কোন সম্ভাবনা নেই । এরা মাতৃভূমি র একই সন্তান বেড়ের উঠবে তা মিথ্যা আশা মাত্র ।" বাবা সাহেব বলেছিলেন সংখ্যা লঘু বিনিময়ের কথা তুলেছিলেন কিন্ত যদিও তৎকালীন অনেকে বাবা সাহেবের বক্তব্যের অর্থ অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন । তাই গান্ধিজি বলেছিলেন "সংখ্যা লঘু বিনিময়ের কথা আমি ভাবতেই পারছিনা ।আমি মনে করি এটা সম্পূর্ণ অবাস্তব প্রস্তাব । এবার আসি শ্যমাপ্রসাদের কথায় তিনি সক্রিয় রাজনীতি তে আসেন ত্রিশের দশকে ১৯৪০ সালে হিন্দু মহাসভার কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হন । ১৯৪১ নে বাংলার রাজনীতি তে অভাবনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৪০ সালে লাহোরে পাকিস্থানের প্রস্তাব পেশকারী ফজলুল হকের সাথে জিন্নার ত্মুল দ্বন্ব দেখা দিল । ফজলুল হক ও তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে মুসলিম লীগ ত্যাগ করলেন । বাংলার বিধান সভায় হিন্দু সদস্য দের সমর্থন নিয়ে সরকারে থাকার চেষ্টা করলেন । ফজলুল হক কে জিন্না কবল মুক্ত করতে শ্যামাপ্রসাদ প্রগ্রেসিভ কোয়ালিশন গড়ে তুললেন আর গঠিত হল শ্যামা -হক মন্ত্রী সভা । শ্যামাপ্রসাদের এই রাজনৈতিক পদক্ষেপ সুভাসচন্দ্র বসু সহ রাজনৈতিক পক্ষ সমর্থন জানিয়েছিল ।
এই মন্ত্রী সভা দীর্ঘ স্থায়ী হয় নি । বাংলার রাজনৈতিক দলিলের ইতিহাসে বাংলার গভর্নর স্যার জন হার বার ট কে দেওয়া পদত্যাগ পত্র জ্বালাময়ী রচনা হিসাবে চিহ্নিত ।
জিন্না প্রত্যক্ষ শুরু করার জন্য বেছেনিয়ে ছিলেন অবিভক্ত বাংলা কে । তার প্রধান কারন বাংলায় তখন মুসলমান রা সংখ্যা গ রিষ্ট আর বাংলায় তখন শহিদ সুরাব্রদির নেতৃত্বে মুসলিম লীগ সরকার । জিন্না তাকেই কলকাতায় প্রত্যক্ষ সংগ্রাম শুরুর দায়িত্ব দিয়েছিলেন ।
পাকিস্থান আদায়ের দাবিতে মুসলিম লীগ কতটা আগ্রাসী এবং মারমুখি তার প্রমান তাদের প্রচার প্ত্র । জিন্নার তরবারি হাতে ছবি দেওয়া প্রচার প্ত্রে লেখা " স্বর্গে ও ইসলামের তরবারি সূর্য কিরনের ন্যায় জ্বল জ্বল করবে এবং সব অশুভ পরিকল্পনা কে নস্যাৎ করে দেবে । আমরা মুসলমান রা রাজ মুকুট পরে দেশ শাসন করছি । উৎসাহ হারিয়ো না , প্রস্তুত হও , অস্ত্র তুলে নাও ,।
একবার ভেবে দেখ হে মুসলমান গন আজ আমরা কাফের দের অধীন । কাফেরদের ভালবাসার পরিণাম ভাল নয় । হে কাফের গন , সুখ বা গর্ব অনুভব কর না । তোমাদের শেষ বিচার বেশি দূরে নয় । সার্বিক ধবংস ঘ নিয়ে আসছে । "
জিন্না নিজে বলতেন " আমার হাতে পিস্তল আছে এবং তা ব্যবহার করব । আমি কোন নীতিশাস্ত্র আলোচনা করতে যাচ্ছি না । আজরাইল বাহিনীর নেতৃত্বে তিন দিন ধরে অবাধে চলেছিল লুঠ তরাজ , অগ্নি সংযোগ , হত্যা , যা গ্রেটার ক্যালকাটা কিলিং নামে পরিচিত । সুরাব্রদি পুলিশ প্রশাসন কে নিস্ক্রিয় করে তোলে । পলাশীর যুদ্ধে থেকে গ্রেটার ক্যালকাটা কিলিং এ বেশি লোক মারা গিয়েছিল ।
সেদিন আবুল কালাম আজাদ বলেছিলেন " কলকাতা শহরে যখন নির্বিচার নারী পুরুষ খুন হচ্ছিল ,তখন পুলিশ ,মিলিটারি চুপ করে ছিল ।
মুসলিম লীগ যে রক্ত ক্ষয়ী হামলার পথে যাবে তা অনুমান করেছিলেন । মুসলিম লীগের উথানের পিছনে ভারতের বিপদ লুকিয়ে আছে শ্যামাপ্রসাদের এই বক্তব্যের উপলব্ধি করতে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতারা । জিন্না চেয়ে ছিলেন সমগ্র পাঞ্জাব ও সমগ্র বাংলা কে পাকিস্থানে নিতে । তাই তিনি বলতেন পোকায় কাটা পাকিস্থান আমি চাই না ।
শ্যামাপ্রসাদ চাইছিলেন বাঙালি হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিভক্ত বাংলার যে অংশ টি হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ঠ অংশ টি ভারতের অংশ ভুক্ত করতে তার জন্যে গান্ধী সহ কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং অন্য হিন্দু নেতৃত্ব দের কাছে ছুটে গেলেন । তাকে সমর্থন করলেন হিন্দু নেতারা ।
জিন্না তা বুঝতে পেরে তখন অখণ্ড বাংলার চাল দিয়ে বাংলা কে ভারত থেকে আলাদা করে দেওয়া । কিরন শঙ্কর , শরত চন্দ্র সরাব্রদি এর স্বাধিন অখণ্ড বাংলা গড়ার ভাবনার পিছনে এই আশা ছিল মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ তার জোরে সেই অংশ কে পাকিস্থানে অন্তর্ভুক্ত করে নিতে কোন অসুবিধা হবে না ।
বাংলার হিন্দুদের স্বতন্ত্র আবাসভুমি শ্যামাপ্রসাদ মরণপণ সংগ্রামে ফল মিলল । ব্রিটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নিলেন বঙ্গীয় আইন সভা য় ভোটাভুটি জানতে চাওয়া হবে কারা ভারত ভাগ আর বাংলা ভাগের পক্ষে । ১৯৪৭ সালের ২০ শে জুন আইনসভার ভোটাভুটি হয় । জিন্না আগেই হুইপ জারি করেছিলেন । ২৫০ সদস্যের ২১৬ জন ভোট দেন । এর মধ্যে ১২৬ জন ভারত ভাগের আর বাংলা ভাগের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন । এখানে উল্ল্যেখ করা কমিউনিস্ট অজ্ঞাত কারনে ভোটদানে বিরত ছিলেন । যদিও কমিউনিস্ট পার্টী জিন্নার পাকিস্থান প্রস্তাব সমর্থন জানিয়ে ছিল । এই ভোটের বাংলার আইনসভা দুই ভাগে ভাগ করা হয় । পূর্ব বঙ্গ আর পশ্চিম বঙ্গ আইনসভা । পশ্চিম বঙ্গ আইন সভা বাংলা ভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে শ্যমাপ্রসাদেরর জিন্নার হাত থেকে হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ঠ অংশ কে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার মধ্য শ্যামাপ্রসাদ সেদিন গর্ব করে বলেছিলেন " জিন্নাহ ভারতকে ভাগ করেছে আমি পাকিস্থান কে ভাগ করেছি ।"
আজকের বাংলাদেশে র ইতিহাস প্রমান করে সেদিনের মহ ন্মদ আলি জিন্নার অলীক ভাবনা
বাস্তবায়িত হয় নি ।
১৯৪৭ সালে বাংলা ও পাঞ্জাব ভাগের ভিতর ভারত ভাগ সম্পন্ন হল । বাংলার পূর্ব অংশ টি পাকিস্থানের ভাগে পড়ে আর পশ্চিম অংশ টি ভারতে । যদিও মহ ন্মদ আলি জিন্না অবশ্য সমগ্র বাংলা কে পাকিস্থানে চেয়ে ছিলেন । বাংলা হবে পাকিস্থানের । তাই কলিকাতা ও নোয়াখালী তে রক্ত গঙ্গা বইয়ে দিতে তিনি দ্বিধা করেন নি । জিন্নার আগ্রাসী থাবা থেকে পশ্চিম বাংলাকে ছিনিয়ে এনে ছিলেন । তাই তিনি বলতে পারেন jinna divide india i divide pakisthan । এই ভারত ভাগের পর জন্ম নেয় দুটি রাষ্ট্র ।
কোরান ভিত্তিক ইসলামিক রাষ্ট্র পাকিস্থান আর গণতান্ত্রিক ভারত । ব্যক্তি শ্যামাপ্রসাদ অবিভক্ত বাংলার হিন্দু জনগোষ্ঠী র স্বার্থের কথা চিন্তা করে পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যটির জন্ম দানে সক্ষম হয়ে ছিলেন । ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এই পর্ব টি সম্পর্কে নিরপেক্ষ ও যথাযথ মূল্যায়ন করা আজ জরুরী । কংগ্রেস কমিউনিস্ট এই ইতিহাস কে গোপন রেখেছে তাদের কর্মী সমর্থক দের মাঝে । সাম্প্রদায়িক হিসাবে চিহ্নিত ইতিহাস বিকৃত করেছে এরা ।
যদি তথ্য নিষ্ঠ ভাবে আলোচনা করা যায় তাহলে বলতে হয় পশ্চিম বঙ্গের জনক জন সঙ্গ নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখারজি । তার রাজনৈতিক সক্রিয় তা ছাড়া একাজ সম্ভব ছিল না । আজ আমরা পাকিস্থান অথবা বাংলাদেশে অধিবাসী হতাম । তার বাগ্মিতা ,আপোষহীন মনোভাব , দূরদর্শিতা জাতীয় রাজনীতি তে তাকে এক স্বতন্ত্র ও সু উচ্চ জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন ।
ভারতের স্বাধীনতার পর্বে মহ ন্মদ আলী জিন্নার থাবা থেকে পশ্চিম বঙ্গ ছিনিয়ে আনা আর কাশ্মীরে ভারত বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির বিরদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শেখ আব্দুল্লার কারাগারে তাকে হত্যা করা ভুল ঔ সধ প্রয়োগ করে । স্বাধীন ভারতের প্রথম শহীদ । ১৯৩০ সালে মুসলিম লীগের স ন্মেলনে উর্দু কবি ইকবাল মুসলমানের জন্য বসবাসের ভুমি দাবি করেন । ইকবালের দাবির ভিতরে আগামিদিনের পাকিস্থানের বিষবৃক্ষের বীজ লুকিয়ে ছিল ।
ইকবাল ইসলামী শাস্ত্র পড়াশুনা করে এসেছেন জার্মানি থেকে গান্ধী বা কংগ্রেস এর বুঝতে পারেনি সাঁরে জাহা সে আচ্ছে হিন্দুস্থান হামারা এর লেখক ইকবাল " আমরা মুসলমান ,সমগ্র বিশ্ব আমাদের ।" কিন্তু বাবা সাহেব আম্বেদকার বুঝেছিলেন তাই গান্ধিকে বলেছিলেন গোল টেবিল বৈঠকে যোগ দিতে যাতে বিচ্ছিন্নতা বাদী রা সামনে আসতে না পারে । ১৯৩৪ সালে নবাবজাদা লিয়া কত আলি আর উর্দু কবি ইকবাল লন্ডনে গিয়ে কোরান ভিত্তিক মুসলিম আবাস ভুমি তত্ত্ব নিয়ে জিন্নাকে বোঝান এ বোঝানো তে কাজ হল । জিন্না আবার ভারতে ফিরে এলেন । এক্ষেত্রে বলা প্রয়োজন ইসলাম ধর্ম অত সচেতন ছিল না ।
বাবা সাহেব আম্বেদক র লিখেছেন " জিন্নার আগ্রাসী ইসলামি রুপ আমরা পেলাম যে ইসলামের জন্য মৃত্যু বরন করতে রাজী । এই সময় তার জনসভা " আল্লা হু আকবর দিয়ে সভা শুরু হত আর কয়েদ ই আজম দিয়ে শেষ হত । লাহোর প্রস্তাবে মুসলিম লীগ ভারত ভাগের কথা বলল {১৯৪০} । তাদের বক্তব্য ছিল " হিন্দু মুসলমান আলাদা জাতি । এরা এক দেশে বাস করতে পারে না । এখানে গান্ধী দেশ ভাগের পক্ষে ছিলেন না ।
মুসলিম লীগের নেতৃত্বে কট্টর হিন্দু বিরোধী মানসিকতা ও মুসলিম লীগের রাজনীতি অনুধাবন করে বাবা সাহেব আম্বেদক র বুঝেছিলেন "অখণ্ড ভারত থাকবে , এটা কল্পনা কষ্ট সাধ্য । কারন বিগত কয়েক শো বছরের মধ্যেও ভারতবাসী একটি জাতি হিসাবে গড়ে উঠবে এমন কোন সম্ভাবনা নেই । এরা মাতৃভূমি র একই সন্তান বেড়ের উঠবে তা মিথ্যা আশা মাত্র ।" বাবা সাহেব বলেছিলেন সংখ্যা লঘু বিনিময়ের কথা তুলেছিলেন কিন্ত যদিও তৎকালীন অনেকে বাবা সাহেবের বক্তব্যের অর্থ অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন । তাই গান্ধিজি বলেছিলেন "সংখ্যা লঘু বিনিময়ের কথা আমি ভাবতেই পারছিনা ।আমি মনে করি এটা সম্পূর্ণ অবাস্তব প্রস্তাব । এবার আসি শ্যমাপ্রসাদের কথায় তিনি সক্রিয় রাজনীতি তে আসেন ত্রিশের দশকে ১৯৪০ সালে হিন্দু মহাসভার কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হন । ১৯৪১ নে বাংলার রাজনীতি তে অভাবনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৪০ সালে লাহোরে পাকিস্থানের প্রস্তাব পেশকারী ফজলুল হকের সাথে জিন্নার ত্মুল দ্বন্ব দেখা দিল । ফজলুল হক ও তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে মুসলিম লীগ ত্যাগ করলেন । বাংলার বিধান সভায় হিন্দু সদস্য দের সমর্থন নিয়ে সরকারে থাকার চেষ্টা করলেন । ফজলুল হক কে জিন্না কবল মুক্ত করতে শ্যামাপ্রসাদ প্রগ্রেসিভ কোয়ালিশন গড়ে তুললেন আর গঠিত হল শ্যামা -হক মন্ত্রী সভা । শ্যামাপ্রসাদের এই রাজনৈতিক পদক্ষেপ সুভাসচন্দ্র বসু সহ রাজনৈতিক পক্ষ সমর্থন জানিয়েছিল ।
এই মন্ত্রী সভা দীর্ঘ স্থায়ী হয় নি । বাংলার রাজনৈতিক দলিলের ইতিহাসে বাংলার গভর্নর স্যার জন হার বার ট কে দেওয়া পদত্যাগ পত্র জ্বালাময়ী রচনা হিসাবে চিহ্নিত ।
জিন্না প্রত্যক্ষ শুরু করার জন্য বেছেনিয়ে ছিলেন অবিভক্ত বাংলা কে । তার প্রধান কারন বাংলায় তখন মুসলমান রা সংখ্যা গ রিষ্ট আর বাংলায় তখন শহিদ সুরাব্রদির নেতৃত্বে মুসলিম লীগ সরকার । জিন্না তাকেই কলকাতায় প্রত্যক্ষ সংগ্রাম শুরুর দায়িত্ব দিয়েছিলেন ।
পাকিস্থান আদায়ের দাবিতে মুসলিম লীগ কতটা আগ্রাসী এবং মারমুখি তার প্রমান তাদের প্রচার প্ত্র । জিন্নার তরবারি হাতে ছবি দেওয়া প্রচার প্ত্রে লেখা " স্বর্গে ও ইসলামের তরবারি সূর্য কিরনের ন্যায় জ্বল জ্বল করবে এবং সব অশুভ পরিকল্পনা কে নস্যাৎ করে দেবে । আমরা মুসলমান রা রাজ মুকুট পরে দেশ শাসন করছি । উৎসাহ হারিয়ো না , প্রস্তুত হও , অস্ত্র তুলে নাও ,।
একবার ভেবে দেখ হে মুসলমান গন আজ আমরা কাফের দের অধীন । কাফেরদের ভালবাসার পরিণাম ভাল নয় । হে কাফের গন , সুখ বা গর্ব অনুভব কর না । তোমাদের শেষ বিচার বেশি দূরে নয় । সার্বিক ধবংস ঘ নিয়ে আসছে । "
জিন্না নিজে বলতেন " আমার হাতে পিস্তল আছে এবং তা ব্যবহার করব । আমি কোন নীতিশাস্ত্র আলোচনা করতে যাচ্ছি না । আজরাইল বাহিনীর নেতৃত্বে তিন দিন ধরে অবাধে চলেছিল লুঠ তরাজ , অগ্নি সংযোগ , হত্যা , যা গ্রেটার ক্যালকাটা কিলিং নামে পরিচিত । সুরাব্রদি পুলিশ প্রশাসন কে নিস্ক্রিয় করে তোলে । পলাশীর যুদ্ধে থেকে গ্রেটার ক্যালকাটা কিলিং এ বেশি লোক মারা গিয়েছিল ।
সেদিন আবুল কালাম আজাদ বলেছিলেন " কলকাতা শহরে যখন নির্বিচার নারী পুরুষ খুন হচ্ছিল ,তখন পুলিশ ,মিলিটারি চুপ করে ছিল ।
মুসলিম লীগ যে রক্ত ক্ষয়ী হামলার পথে যাবে তা অনুমান করেছিলেন । মুসলিম লীগের উথানের পিছনে ভারতের বিপদ লুকিয়ে আছে শ্যামাপ্রসাদের এই বক্তব্যের উপলব্ধি করতে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতারা । জিন্না চেয়ে ছিলেন সমগ্র পাঞ্জাব ও সমগ্র বাংলা কে পাকিস্থানে নিতে । তাই তিনি বলতেন পোকায় কাটা পাকিস্থান আমি চাই না ।
শ্যামাপ্রসাদ চাইছিলেন বাঙালি হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিভক্ত বাংলার যে অংশ টি হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ঠ অংশ টি ভারতের অংশ ভুক্ত করতে তার জন্যে গান্ধী সহ কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং অন্য হিন্দু নেতৃত্ব দের কাছে ছুটে গেলেন । তাকে সমর্থন করলেন হিন্দু নেতারা ।
জিন্না তা বুঝতে পেরে তখন অখণ্ড বাংলার চাল দিয়ে বাংলা কে ভারত থেকে আলাদা করে দেওয়া । কিরন শঙ্কর , শরত চন্দ্র সরাব্রদি এর স্বাধিন অখণ্ড বাংলা গড়ার ভাবনার পিছনে এই আশা ছিল মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ তার জোরে সেই অংশ কে পাকিস্থানে অন্তর্ভুক্ত করে নিতে কোন অসুবিধা হবে না ।
বাংলার হিন্দুদের স্বতন্ত্র আবাসভুমি শ্যামাপ্রসাদ মরণপণ সংগ্রামে ফল মিলল । ব্রিটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নিলেন বঙ্গীয় আইন সভা য় ভোটাভুটি জানতে চাওয়া হবে কারা ভারত ভাগ আর বাংলা ভাগের পক্ষে । ১৯৪৭ সালের ২০ শে জুন আইনসভার ভোটাভুটি হয় । জিন্না আগেই হুইপ জারি করেছিলেন । ২৫০ সদস্যের ২১৬ জন ভোট দেন । এর মধ্যে ১২৬ জন ভারত ভাগের আর বাংলা ভাগের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন । এখানে উল্ল্যেখ করা কমিউনিস্ট অজ্ঞাত কারনে ভোটদানে বিরত ছিলেন । যদিও কমিউনিস্ট পার্টী জিন্নার পাকিস্থান প্রস্তাব সমর্থন জানিয়ে ছিল । এই ভোটের বাংলার আইনসভা দুই ভাগে ভাগ করা হয় । পূর্ব বঙ্গ আর পশ্চিম বঙ্গ আইনসভা । পশ্চিম বঙ্গ আইন সভা বাংলা ভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে শ্যমাপ্রসাদেরর জিন্নার হাত থেকে হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ঠ অংশ কে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার মধ্য শ্যামাপ্রসাদ সেদিন গর্ব করে বলেছিলেন " জিন্নাহ ভারতকে ভাগ করেছে আমি পাকিস্থান কে ভাগ করেছি ।"
আজকের বাংলাদেশে র ইতিহাস প্রমান করে সেদিনের মহ ন্মদ আলি জিন্নার অলীক ভাবনা
বাস্তবায়িত হয় নি ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন